শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে শামছুল আমিন ফাউন্ডেশন: সোনাগাজীর মেধাবিকাশের এক উজ্জ্বল অভিযাত্রা

ভূমিকা: শিক্ষার আলো ছড়ানো এক অসামান্য প্রয়াস

শামছুল আমিন ( বাচ্চু মিয়া) ফাউন্ডেশন

বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি নাম আজ সুপরিচিত – শামছুল আমিন (বাচ্চু মিয়া) ফাউন্ডেশন। ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার তাকিয়া বাজার এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ২০১৭ সাল থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য হলো—"শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ"। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ফাউন্ডেশনটি শুধু বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজনই করে না, পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে নানা ধরনের সহায়তা ও অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকে।

একটি সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক সংগঠন হিসেবে শামছুল আমিন ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যে সোনাগাজী এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর শিক্ষাব্যবস্থায় একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই লেখায় আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব কীভাবে এই ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে ভূমিকা রাখছে, তাদের বৃত্তি পরীক্ষা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষা সম্প্রসারণে অবদান এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে তাদের নিবিড় সম্পর্ক নিয়ে।

অধ্যায় ১: ফাউন্ডেশনের উৎপত্তি ও আদর্শিক ভিত্তি

১.১ প্রতিষ্ঠার পটভূমি

শামছুল আমিন (বাচ্চু মিয়া) ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালে। এটি স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবী শামছুল আমিন (বাচ্চু মিয়া)-এর স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক সংগঠন। শামছুল আমিন ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান রাখেন। তাঁরই স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়।

ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ নুরুল হোসাইন, ডা. খালেদ মাহমুদ টিপু, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইমাম উদ্দিন, এডভোকেট নাছির উদ্দিন বাহার প্রমুখ ব্যক্তিত্ব। তাঁরা সকলেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং শিক্ষা ও সমাজসেবায় নিবেদিতপ্রাণ।

১.২ দর্শন ও লক্ষ্য

ফাউন্ডেশনের মূল দর্শন হলো "শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড"। এই দর্শনকে ধারণ করে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে নিম্নলিখিত লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য:

  • শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ

  • মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা

  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার বিকাশ ঘটানো

  • স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা

  • নারী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া

১.৩ পরিচালনা পদ্ধতি

ফাউন্ডেশনটি একটি সুষ্ঠু ও পেশাদার পরিচালনা কাঠামোর মাধ্যমে কাজ করে। এখানে রয়েছে একটি নির্বাহী কমিটি, যা ফাউন্ডেশনের নীতি নির্ধারণ ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন:

  • সভাপতি: প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ নুরুল হোসাইন

  • সাধারণ সম্পাদক: ডা. খালেদ মাহমুদ টিপু

  • সহ-সভাপতি: ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইমাম উদ্দিন

  • কোষাধ্যক্ষ: এডভোকেট নাছির উদ্দিন বাহার

  • সদস্য: স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ

অধ্যায় ২: মেধা যাচাইয়ে বৃত্তি পরীক্ষা: একটি জাতীয় উদ্যোগের ছোঁয়া

২.১ বৃত্তি পরীক্ষার ইতিহাস ও বিবর্তন

শামছুল আমিন ফাউন্ডেশন প্রতিবছর স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করে, যা শুধু সোনাগাজী নয়, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে আকর্ষিত করে। ২০১৭ সালে মাত্র কয়েকশ শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হওয়া এই পরীক্ষা 

২০১৯ সাল ছিল ফাউন্ডেশনের জন্য একটি মাইলফলক। এই বছর প্রথমবারের মতো ১০০০-এর বেশি শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষার ব্যাপকতা ও সফলতা ফাউন্ডেশনকে আরও বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।

২.২ ২০২৩ সালের বৃত্তি পরীক্ষা: একটি বিশদ বিশ্লেষণ

২০২৩ সালে প্রায় আড়াই হাজার পরীক্ষার্থী এই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষাটি তাকিয়া বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা প্রমাণের সুযোগ পায়।

ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ নুরুল হোসাইন এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক গিয়াস উদ্দিন-এর তত্ত্বাবধানে পরীক্ষাটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়। পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নে ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ।

২.৩ বৃত্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া

ফাউন্ডেশন বৃত্তি পরীক্ষার জন্য নিম্নলিখিত প্রস্তুতি গ্রহণ করে:

  • ৩ মাস আগে থেকে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

  • অনলাইন ও অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন সুবিধা

  • সিলেবাস তৈরি ও প্রকাশ

  • পরীক্ষা কেন্দ্র প্রস্তুত

  • অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা খাতা মূল্যায়ন

২.৪ পরীক্ষার ফলাফল ও বিশ্লেষণ

প্রতি বছর বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে ফাউন্ডেশন নিম্নলিখিত তথ্য পেয়েছে:

  • গড়ে ১৫-২০% শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়ে থাকে

  • মেয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে

  • গ্রামীণ এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ফলাফল শহরের শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি

  • মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও সাফল্য উল্লেখযোগ্য

অধ্যায় ৩: পুরস্কার বিতরণী: স্বীকৃতি যে অনুপ্রেরণার বাতিঘর

৩.১ পুরস্কার বিতরণীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য

শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে ফাউন্ডেশন নিয়মিত পুরস্কার বিতরণী ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানগুলি শুধু পুরস্কার বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলি হয়ে ওঠে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব।

৩.২ ২০২৪ সালের পুরস্কার বিতরণী: একটি স্মরণীয় ঘটনা

২০২৪ সালে মোট ১৪৪ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্ষ্টি ও সনদ প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানটি ১৯ জুন ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:

  • এডভোকেট নাছির উদ্দীন বাহার

  • জোবেদা নাহার মিলি

  • এডভোকেট আবদুল ওয়াহাব

  • ডা. খালেদ মাহমুদ টিপু

  • ইঞ্জিনিয়ার ইমাম উদ্দিন

  • গিয়াস উদ্দিন

  • মাওলানা আবদুল হাকিম

৩.৩ ২০২৫ সালের পুরস্কার বিতরণী: আরও বড় আরও সমৃদ্ধ

২০২৫ সালের পুরস্কার বিতরণী ছিল আরও বড় আকারে এবং আরও সমৃদ্ধ। এই বছর ৫০০-এর বেশি দর্শকের উপস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়। এ-প্লাস প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়।

২০২৫ সালের অনুষ্ঠানের চীফ গেস্ট ছিলেন জনাব মাহাবুবুল হক মিল্লাত, সাবেক সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। গেস্ট অব অনার ছিলেন প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্পেশাল গেস্ট ছিলেন জনাব মোরশেদ আলম সেলিম, বিশিষ্ট শিল্পপতি।

৩.৪ পুরস্কারের ধরন ও মান

ফাউন্ডেশন নিম্নলিখিত ধরনের পুরস্কার প্রদান করে:

  • মেধাবৃত্তি: টিউশন ফি মওকুফ ও আর্থিক সহায়তা

  • সনদপত্র: সকল অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীকে

  • বিশেষ পুরস্কার: এ-প্লাস প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের

  • ক্রেস্ট: অতিথি ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গকে

অধ্যায় ৪: শিক্ষা সম্প্রসারণ: শুধু বৃত্তি নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা

৪.১ শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ভূমিকা

ফাউন্ডেশন শুধু বৃত্তি প্রদানেই থেমে নেই, বরং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করে:

  • শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন

  • শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

  • লাইব্রেরি উন্নয়ন প্রকল্প

  • ডিজিটাল শিক্ষা প্রসারে কাজ

৪.২ মাদক বিরোধী সচেতনতা কার্যক্রম

ফাউন্ডেশন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিরা মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন তাঁর বক্তব্যে বলেন, "মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। যেখানে মাদক সেখানেই প্রতিরোধ করতে হবে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে তথ্য দিতে স্থানীয় এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।"

৪.৩ নারী শিক্ষা ও সমতা উন্নয়ন

ফাউন্ডেশন নারী শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের কাছে আবেদন জানানো হয়—"মেয়েদের যোগ্য করে গড়ে তুলুন, যৌতুক নয়"

২০২৪-এর সংস্থান অনুযায়ী, ফাউন্ডেশনের বৃত্তিপ্রাপ্ত ফলাফল ৪৫% মহিলা, যা জাতীয় গড় চেয়ে বেশি।

৪.৪ স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতা

ফাউন্ডেশন স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করে:

  • ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়

  • বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদ

  • স্থানীয় মাদ্রাসাসমূহ

  • সোনাগাজী উপজেলা প্রশাসন

অধ্যায় ৫: সম্প্রদায় ও ফাউন্ডেশন: একসাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়

৫.১ স্থানীয় নেতৃত্বের সম্পৃক্ততা

ফাউন্ডেশনের সভা ও অনুষ্ঠানে স্থানীয় রাজনৈতিক, শিক্ষা ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের সক্রিয় অংশগ্রহণ এটি একটি সামাজিক আন্দোলন-এ পরিণত করেছে। স্থানীয় নেতৃত্বের এই সম্পৃক্ততা ফাউন্ডেশনকে গ্রামীণ পর্যায়ে আরও কার্যকরী হতে সাহায্য করেছে।

৫.২ অভিভাবকদের অংশগ্রহণ

ফাউন্ডেশন অভিভাবকদের সাথে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখে। নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ এর আয়োজন করে, যেখানে শিক্ষার্থীদের উন্নতি, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

৫.৩ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও প্রতিক্রিয়া

ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি ফাউন্ডেশনের সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অধ্যায় ৬: সাফল্য ও অর্জন: সংখ্যা ও গল্পে

৬.১ পরিসংখ্যানগত সাফল্য

বছর  পরীক্ষার্থী সংখ্যাবৃত্তিপ্রাপ্ত    নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমন্তব্য
২০২৩  ৫০০৫০৩০%প্রারম্ভিক বছর
২০২৪   ৭৫০৭৫৩৫%   

স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি

২০২৫   ১,২০০১২০৪০%

উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি

২০২০   ১,৫০০১৫০৪২%

চিত্তাকর্ষক প্রবৃদ্ধি

২০২১  ১,৮০০১৮০৪৩%প্রারম্ভিক বছর
২০২২  ২,২০০২২০৪৪%প্রারম্ভিক বছর
২০২৩  ২,৫০০২৫০৪৫%প্রারম্ভিক বছর

৬.২ সাফল্যের গল্প

রোকেয়া আক্তার (ছদ্মনাম) ২০২০ সালে ফাউন্ডেশন থেকে বৃত্তি পান। তিনি currently মেডিকেল কলেজে পড়ছেন। তাঁর কথা: "ফাউন্ডেশনের বৃত্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, এটি আমার জন্য একটি বিশাল প্রেরণা

অধ্যায় ৭: চ্যালেঞ্জ ও সমাধান

৭.১ মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জ

ফাউন্ডেশন নিম্নলিখিত চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়েছে:

  • অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা

  • দূরবর্তী এলাকায় পৌঁছানো

  • কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব

৭.২ গৃহীত সমাধান

উপরোক্ত চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়ে ফাউন্ডেশন নিম্নলিখিত সমাধান গ্রহণ করেছে:

  • স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অংশীদারিত্ব

  • ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ানো উচিত

  • স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্ক গঠন করা প্রয়োজন

  • স্থানীয় সরকারের সাথে অংশীদারিত্ব

অধ্যায় ৮: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

৮.১ স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা (২০২৪-২০২৬)

  • ডিজিটাল লাইব্রেরি স্থাপন

  • স্কলারশিপ ফান্ড বৃদ্ধি

  • ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেবা

  • মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ

৮.২ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা (২০২৭-২০৩০)

  • বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন

  • আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ চালু

  • নতুন উপজেলায় সম্প্রসারণ

  • ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম চালু

অধ্যায় ৯: শিক্ষায় ফাউন্ডেশনের প্রভাব: একটি সমন্বিত বিশ্লেষণ

৯.১ শিক্ষাগত প্রভাব

ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের শিক্ষাগত প্রভাব নিম্নরূপ:

  • শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন

  • মেধা বিকাশ ও চিহ্নিতকরণ

  • শিক্ষার্থীদের প্রেরণা বৃদ্ধি

  • শিক্ষকদের ক্ষমতা উন্নয়ন

৯.২ সামাজিক প্রভাব

  • সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি

  • নারী শিক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব

  • যৌতুক বিরোধী মনোভাব গঠন

  • মাদক মুক্ত সমাজ গঠন

৯.৩ অর্থনৈতিক প্রভাব

  • আর্থিক সাশ্রয় অভিভাবকদের

  • মানব সম্পদ উন্নয়ন

  • স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব

উপসংহার: একটি আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে

শামছুল আমিন (বাচ্চু মিয়া) ফাউন্ডেশন শুধু একটি সংগঠন নয়—এটি একটি আন্দোলন। এটি সোনাগাজীবাসীর মনে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে একটি উন্নত, জ্ঞানভিত্তিক সমাজের।

ফাউন্ডেশনের কাজ শুধু বৃত্তি প্রদান বা পরীক্ষা আয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি সামগ্রিক শিক্ষা বিপ্লবের অংশীদার, যা স্থানীয় সম্প্রদায়কে নিয়ে গড়ে উঠছে এবং জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখছে।

ডা. খালেদ মাহমুদ টিপু যথার্থই বলেছেন, "সংবর্ধনার মাধ্যমে কৃতি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় আরও মনোযোগী ও উৎসাহ পাবে।"

ফাউন্ডেশনের এই প্রচেষ্টা কেবল সোনাগাজীতেই নয়, পুরো ফেনী জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও উদ্যোগ গড়ে উঠবে এবং বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

পরিশিষ্ট: গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ফাউন্ডেশনের যোগাযোগের ঠিকানা:

শামছুল আমিন (বাচ্চু মিয়া) ফাউন্ডেশন
তাকিয়া বাজার, সোনাগাজী, ফেনী
ইমেইল: info@sabmf.top

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ:

  • প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ নুরুল হোসাইন (সভাপতি)

  • ডা. খালেদ মাহমুদ টিপু (সাধারণ সম্পাদক)

  • ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইমাম উদ্দিন (সহ-সভাপতি)

  • এডভোকেট নাছির উদ্দিন বাহার (কোষাধ্যক্ষ)

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ:

  • প্রতিষ্ঠা: ২০২৩

  • বার্ষিক বৃত্তি পরীক্ষা: নভেম্বর-ডিসেম্বর

  • পুরস্কার বিতরণী: জুন-জুলাই

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url